Monday 9 April 2018

অয়ন চৌধুরী






গুচ্ছ কবিতা

.

মেরুদন্ডের পাশে একটি প্রাগৈতিহাসিক ছায়া—
               আশ্চর্য বিলাপের পর
রুদ্ধ শ্বেতপদ্ম জমে ওঠে বালকবেলায়।
ভালোবাসা রঙের সরোবরে
           একটি হংসরাজ চঞ্চুর আঘাতে তুলে নেয়
                          দানা দানা বিষাদ
বিষাদের মধ্যে বীজ। বীজের মধ্যে বহুকালের শোকপ্রস্তাব স্তূপের মতো
                              বাঁশরী বাজায়!



২.

কে জানে কোথায় চলে যায় এত রাস্তা
এইমাত্র একটা খোলা ভেঙে রক্তের শব্দ হল
ভেঙে গেল দিন
       দিনের গর্ভ—
বাসস্টপে থামেনি আজ বাস
          এতটা দূরগামী
যে সমস্ত বন্ধনের চিতায় আগুন দিয়ে
           ফিরে আসব শশ্মান বান্ধব...




৩.

তোমার শৌর্য ভেঙে পড়ে অসময়ে
     কয়েকশো পদাতিক পুরনো রৌদ্র মেখেছে
হে গুহা, হে অসম্ভব
      আমাদের ফিরিয়ে নাও এমন দুর্গমতার বল্কল ভেঙে
প্রতিটি ভয়, প্রতিটি আশঙ্কার কাছেই
                   উদ্ভিদভরা এক একটি বিকেল। পর্ণমোচী।
এক একটি পাতার শিরায় বহুকালের শোক
দু’চার ফোঁটা ক্ষতমুখ আগলে হলুদ হয়ে আছে—
নাম না জানা রাস্তার মতো এ দেশে শীত ঢুকছে ঘন
      তখনও পাথরের পাঁজরে নাম লিখছে কেউ
                          লিখছে সম্পর্ককথা
এক একটি মুখ উষ্ণতা ভেঙে ঘনতর কুয়াশার দিকে ডাক পাঠায়
বন্দুক নামিয়ে রেখে, সমস্ত যুদ্ধসাজ ফেলে রেখে
                  এক একটি খোলা ভেঙে রাত্রির কাছে হারিয়ে গেছি...
সেখানে পুরনো নদীর জলে আমাদের দু’মুঠো উদ্‌যাপন হোক...


  
৪.

গাছের আড়ালে একটা উষ্ণ ঠোঁট আসে রোজ
আমার পাতাবাহারের ঠিক নীচে জমেছে শতাব্দীর খেদ
বিকেলের খয়েরি নিঃস্তব্ধতায় ওদের পায়ে জল ছোঁয়ালে
মুখ ফিরিয়ে নিয়ে শুধু উষ্ণতা খোঁজে ইতিউতি
আমার প্রতিটি ভার্টিব্রাটার খোলসে শুধু হিম ঢাকা আছে
কোমল বিশ্বাসে আরও একটি পাতা
                 ঝরে গেল
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখলাম
কামনার ফাটা ঠোঁটে জেগে উঠল রক্তরেখা। ভাঙনের অসংলগ্ন সোহাগ...






No comments:

Post a Comment