Saturday 14 April 2018

এ বড় সুখের সময় নয়, এ বড় আনন্দের সময় নয়





"ভাষা একটা সময়ে আর কোনো কথা বলতে পারে না। শুধু তার অনেক গভীর থেকে এক বুকচাপা গোঙানির আওয়াজ উঠে আসে। টের পাই -- হাত পা সব ভেঙে পেটের ভিতরে ঢুকে গেছে। 

কোত্থাও কেউ নেই। শুধু এক দেশজোড়া লিঙ্গ জেগে আছে কুতুবমিনারের মতো। আর তার চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা রক্তজেলিমাখা সব বাচ্চাদের থেঁৎলে দেওয়া যোনি। তার ছায়ায় দাঁড়িয়ে আমি ভাবছি, আমার মেয়েকে নিয়ে এইবার আমি কোথায় পালাবো? 

আমার মেয়েও এই বছর আটে পড়বে।"

না, কাউকে শুভ নববর্ষ জানাতে পারছি না। জানাবার মতো মানসিক অবস্থাও নেই আমাদের কারুর। আমরা যে ভয়ংকর সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, সেখানে প্রতি মুহূর্তে এক অনিশ্চয়তার ভয়। বেশি কিছু না বলে এক পিতার আতঙ্কই রেখে দিলাম এখানে। আমরা জানি না রাস্তা কোথায়। জানি না কীভাবে আমরা বসবাসযোগ্য করে তুলব এই পৃথিবীকে। আমাদের দেশ আর শিশুকন্যাদের জন্য নিরাপদ নয়। এক প্রকৃত মৃত্যু-উপত্যকা এই দেশ। একটি কবিতা তুলে দিলাম এখানে। আমাদের আরেক বন্ধুর রক্তপাত...


 আমি আসিফার বাবা

 অংশুমান কর

পশুরা পড়লেও পড়তে পারে
কিন্তু নরাধমরা কবিতা পড়ে না
তাই কবিতা লিখে ধর্ষণ থামানো যায় না
আমি জানি।
কবিতা পড়লে পাছে মিথ্যে বলার সময়,
প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় জিভ খসে পড়ে
তাই নেতারাও কবিতা পড়েন না
আমি জানি।
নরাধমদের সমর্থনে যে দানবগুলো আজ দাপাদাপি করছে দেশজুড়ে
তাদের একজনও সেই হিংসুটে দৈত্য নয়
যে কবিতা বা শিশু তাদের মন পালটে দেবে
আমি জানি।
তাই আমি কোনও কবিতা লিখছি না।
কবিতা মনে করে যাকে তুমি পড়ছ
সে আমার চিৎকার
আমার মেয়ের নাম তিন্নি
আমার মেয়ের নাম আসিফা
আমি আজ চিৎকার করবই!

No comments:

Post a Comment