Saturday 7 April 2018

ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী



শ্বাসরোধ পর্ব



(তৃতীয় পর্ব)


(১)

দাঁড়িয়ে আছে যে শস্য ক্ষেত
মিনারভা চূড়ায়,
তার আ- বিস্তৃততায় থেমে আছে সকল
বনস্পতি অঞ্চল।

থেমে আছে - পরবাসী চাঁদ।
ছুঁয়ে আছে - নক্ষত্র থেকে টেনে আঁকা ভোর।
আর গভীর গভীর করে যে ক্ষত টানা হলো
তার ক্রম, তার শাম্বুক গতি।

বেঁচে থাকার পয়গম্বর হীন বেদনায়
আজ এই আঁধার অঞ্চল,
আর শিখে নেওয়া সহবাস ক্রিয়া।






(২)

মুহূর্ত ক্ষতি হয়ে যায়
তবু গানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে কেউ।
যতটা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা যায়  ঘনিষ্ঠ  অঞ্চল।
তার চেয়ে চল যাই আমরা
সোজা অবিলতায়
বা
কাশফুল আর রেলগাড়ির গল্পে।
বাতাসে আলোর বেগ
তোমাকে ছুঁয়ে ফেলার জটিলতায়,
শিখিয়ে দিচ্ছে চেনাকে কিভাবে চিনে নিতে হয়
নতুনতায়।


(৩)

হটাৎ কারুর  চোখে যদি জল থাকে
তবে সেটা দুঃখ নয়, জেনো
বাতাস ও ভেসে বেড়ানো
কিছু রেখে দিয়েছে পারস্পরিক বোঝাপড়ায়।
শ্রী যেমন রেখে দিয়েছে
পর্দার ওপারে কিংবদন্তি সত্য;
যে সত্য লুকানো খরগোশ
সামনে এলেও,
আমার তোমার ফেলে রাখা
শ্বাসরোধ  কথা।
কোন দূরের টিলার ওপারের জল ।





(৪)

নিখাদ দূরত্ম থেকে যে সত্য জানিয়ে দিচ্ছে,
সে আদপেই সত্য নয়।
কারও নিজ মালা গাঁথা হলে- আমার কাছে সে উজ্জ্বল জল।
আর দূর থেকে যে টুকু সংকেত চিহ্ন,
তা আমার এক রোখা আকাশ থেকে
সামনে শুধু দাঁড়িয়ে থাকা।
তবে কি করে বন্ধু হব?
কি করে বুঝব পৃথিবীর শেষ কারিগর
তাল তাল মাটি নিয়েছে
আবার নির্মাণ করবে বলে।




(৫)

বারুদ সন্ধ্যে
ঘরের মধ্যে আলো  নিভিয়ে দিচ্ছে
-     এই শ্বাস।
জানলা ওপারে তার
এক রোখা - আলাদা করে দিচ্ছে আলোর গল্প ।
এরপরেও যদি চোখ জ্বলে,
তবে যেন দূর আকাশে
         নক্ষত্র সন্নিবদ্ধতায়
সে সব সন্ধ্যে লেখা থাকে -এক একটি মিথকল্পে।

(৬)

আলোর গল্প, আকাশের, গল্প,
অতর্কিতে ছুঁয়ে দেখার গল্প- সব এক হয়ে গেল।
কোন উজ্জ্বল মেঘ প্রতিবিম্বের মত
ছুঁয়ে গেছে নভতল আকাশ। অনেক বছর কেটে গেলে,
পাশ ফিরে  শুয়ে পড়েছে
এক একটি যোনি হৃদয়।
এরপরেও
সূর্যমুখী যে ভাবে
সুনামির পরের আকাশের দিকে দেখে
তার নিজস্ব  প্রগলভতায়...সেসব টের আমাদের নেই।


(৭)

এক বিস্তৃত মাঠ
আর এক টুকরো খামার বাড়ি।
আর মাঠের চেতনায়
যতটা কান্না দিল, তবে
খামার বাড়ি  বেঁচে থাকে
নক্ষত্রের অনুষঙ্গতায়- এক একটি ছবির পারদ  সীমাহীন
চোখের চেয়ে থাকায়।

(৮)

একটি চেয়ার দিয়ো
আকাশের তলায়।
পরিচালককে বল
একটি ভূসংস্থান করে দিতে -
এক বিষাদ দৃশ্যের
বিস্তীর্ণ জলাভূমি জুড়ে, ফিরে আসা ট্রেনে।
তোমার হাত থেকে খুলে পড়া
উলের মানচিত্র ধরে- ফিরছে বিস্তীর্ণ নদী কল্পে।
বাড়িগুলো ভেসে আছে
ঝড়ের রাতে আলোর সংকেত চিহ্নর মত।
আমি তুমিও বেঁচে আছি
দূরের দ্রাঘিমায়
মড়কহীন সহ্য বাসরে,
এক একটি বিষাদ দৃশ্যের উপস্থাপনায়।


(৯)

আজকের দিনে শ্রদ্ধার দেশে
বৃষ্টির রেশে পাটাতন ভেঙ্গে যায়।
একটানা বৃষ্টিতে,
শ্বাসের যেটুকু রুদ্ধ ছিল,
তা আজ নিতান্তই অবসর সান্নিধ্যে
বিকেলের হাঁটাচলায় খুঁজে পাওয়া।
বিকেলের গানে ভেসে যাচ্ছে ,
মেঘ, দিনলিপি, তোমার অবর্তমান   
আর বাকি সব-
আজকের দিনে শ্রদ্ধার দেশে।





(১০)

তোমার পাশে আসায়
খুলে যাচ্ছে এক একটি মেঘ।
দানাভরা শস্য দিচ্ছ তুমি - আর আমায় বলছ,
“ এক একটি ভিতর, পতঙ্গমুখী ব্যাভিচারি প্রজাপতি উড়িয়ে দাও।
উড়িয়ে দাও মুক্তার সুখ।
নির্জন কালে, একা মাঠে, একা মাঠে, উপড়ে আকাশ
আ - বিস্তারে,
উন্মুক্ত হচ্ছে এক একটি
নক্ষত্রলোক,  এক একটি প্রজাপতি শহর,
হেমন্ত কালে,  শেষ রাত্রে বেহুলার পালার গান।


No comments:

Post a Comment