Saturday 7 April 2018

উৎপল তালধি






সূচিপত্রে মুসাফির

১)
ছোটোখাটো দুঃখ দিয়ে সাজাই সংসার
যাকে বলে সুখী গৃহকোণ,
যতই এগোয় দিন তত মনে হয়
সূচিপত্রের শেষে রাত্রিযাপন।
২)
ছাপোষা মানুষ কালো সময়ের বুকে
বসেই উপড়ে ফেলি তার সাদা দাড়ি
আর দেখি একফোঁটা চোখের বদলে
কেউ এসে নিয়ে গেছে পান্তার হাঁড়ি।
৩)
কেউ আসে, কেউ যায়, কেউ ঘাঁটি গেড়ে
বেড়ে ওঠে একেবারে হাড় থেকে হাড়ে,
দেখেশুনে না দেখার ভান করে ভাবি
আমিও তো বসে আছি আগাছার ঝাড়ে।
৪)
ভালো আর মন্দের গোলকধাঁধায়
সাপটাকে দড়ি ভাবি, দড়ি টাকে সাপ,
সবটুকু তালগোল পাকাবার শেষে
স্বর্গের সিঁড়ি ভাঙ্গে নরকের ছাপ।
৫)
এসেছি বলেই কিছু রেখে যেতে চাই;
সিঁড়িভাঙা অঙ্কের মতো এ জীবন,
উপরে উঠতে গিয়ে যা ধরেছে মনে
তা নিজের বিরুদ্ধে কথোপকথন।
৬)
এই আছি, এই নেই, ই দোলাচলে
যা সচল তা কেবল কুহেলীকুহক;
চোখ গেলো বলে পাখি পালক খসালে
দশ দিকে জেগে ওঠে শব্দের ছক।
৭)
কাকে ছেড়ে কাকে ধরি-- আঠারো বা আশি
প্রয়োজনে সকলেই কবিতার বীজ,
সময়ের ক্যানভাসে আঁধার ঘনালে
তারাদের ভিড়ে তারা করে গিজ্ গিজ্।
৮)
রুমাল বেড়াল হয়ে মিউ মিউ করে
নোংরা খেলার মাঠে প্রাকৃতিক কাজ
সেরে নিয়ে ঢেকে দেয় স্বভাবের বশে---
পায়রার বায়ুথলি মেপে নেয় বাজ।
৯)
অবশেষে ডানা থেকে রোদ মুছে গেলে
ধেয়ে আসে তীরবেগে কালের তিমির;
পান্থশালার বাতি টিম টিম জ্বলে----
জেগে থাকে অপলক এক মুসাফির।


No comments:

Post a Comment