Saturday 7 April 2018

শ্রীশান্ত



দেবতাদের কবিতা [অংশ]




অধিবাস
দূর থেকে দেখলেই অনেকে বলে,
এক-একটা আঙুলই নাকি প্রাকৃতিকবিপর্যয়যোগে তুঁহু মম হয়ে উঠেছে!
এর মধ্যে কি কোন লালদুধে-হুট-করে-পা-পরে-যাওয়া-বউ তোমার নজরে আসে ?
বল বউ?
দেবতা ও বাউটি ও শুকনোহরিণের শাঁসনির্গত মা করুণাময়ী!!

উপুড় হয়ে যে মধুনির্গমনজনিত শিকারবোধে আঙ্গুলেই নিজের হাঁটু রেখেছি ...
ভুলে যাচ্ছি অঙ্গবোধ ...
তাতেই ধান-দুব্বা রাখো ...
ঝাড়া দাও চোখেরই হরিণে,
এ হেমন্তে সে হেমন্তে...  


অপরাজিতা পুজো
পায়ে তে মথ এসে বসলেও তুমি মনে পড়,
হৃদয়ের কুণ্ডহাঁড়িতে তোমার প্রতিচ্ছবির কেঁপে ওঠা প্রত্যক্ষ করি আমি;
আদর পেয়ে লালরঙের সুতোদের শিরা-উপশিরা হয়ে ওঠা তোমার সাথে আমিও দেখেছি ...

আজ তাই, এই দই-মাখার সকালে 
আস্তে আস্তে সকালের গডিয়ে যাওয়া দিয়ে বুঝে যাচ্ছি, 
হাজার-আরতিতেও তোমাকে আটকান যাবে না...






 প্রাণপ্রতিষ্ঠা

শরীরের থেকেও গোপন হয়ে ওঠে পাসওয়ার্ড 
ধুলোয় চূর্ণ করি দর্প 
কেউ আর দর্প বলে ডাকে না
আমি ঘুমোই
যদি লীলাবতী এসে একঠোঁট রাই ঢালার ইশারা করে
ওমুখো হব কিনা; সম্ভাবনা করা মুস্কিল
তাই, রাধারাই এলেবেলে খেলি
ধরো প্রহসন,
প্রবঞ্চনার মৃদু আলোর গর্ভে যে প্রথমদর্শনের স্বাদ জমিয়ে রাখো
কিছু ফিরে তাকাও ও তাকাই , চল
আমার গর্ভে এনে রাখো ফুলদানি জঙ্গলমুখী করে
কিছু চূর্ণে দেবতাও এসে লাগে
আঙুল বেয়ে বাড়ি বয়ে আসেন চালচিত্রের দেবী
নরম সম্পর্কে ছুঁয়ে রাখো লোহা-উপবীত
ধারণ ও অহংকারের কারুকাজে কপাল ছোঁয়ানোর প্রসঙ্গে আসি
যেকোনো ব্রণটানে যেমন ফিরে আসে বালক
তবু, মাধুর্যে আটকে রাখছ আমার ডাকনাম
বাপিন হয়ে উঠছে যেকোনো নতুনতম শাড়ী-দিয়ে-ঢাকা গ্রহ;
নাগাল পাচ্ছ না...


চক্ষুদান

দুটি শ্বাস জুড়ে রাখি, হারাবার ভয়ে
যেন ফুলদানি থেকেই গড়িয়ে ফেলছি জল...
হৃদ্‌ধাতু তবু অনড়,  সংকটে
ডুকরে ডুকরে চক্ষুদান করে অশ্রুমূর্তির...

ফিরে যা দেখি, তা-ই কি সব
কে এই অসম্পূর্ণে নৈবেদ্য সাজাবে
আলোয় ঘিরে রাখো কাজললতিকা, অপত্যসম
আমিও তো তাকাই বা প্রতিদর্শন
যতটা পুষ্পপাত্রে লেগে থাকে দৈব

স্থাপন করি, তোমায় বা আমায়
যতটা স্পর্শে সম্পর্কের সাড় জাগে
চোখে আঙুল বসাই, আঙুলে চক্ষু
তোমার যতটা চক্ষুদান, আমার ততটা শুভদৃষ্টি ...


No comments:

Post a Comment